আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ অক্টোবর, ২০২৫, 12:17 AM
জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল পেরু, রাজধানীতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে জেন-জি তরুণদের নেতৃত্বে দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধবিরোধী আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ায় রাজধানী লিমা ও আশপাশের এলাকায় ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার।
বুধবার (২২ অক্টোবর) টেলিভিশনে দেওয়া এক জরুরি ভাষণে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হোসে জেরি এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “দেশের পরিস্থিতি এখন শুধু কথায় সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, কঠোর বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।”
জরুরি অবস্থার অংশ হিসেবে সেনাবাহিনী রাস্তায় নামানো হয়েছে এবং নাগরিকদের সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার সীমিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জেরি জানান, সরকার এখন থেকে ‘প্রতিরক্ষামূলক’ নীতি বাদ দিয়ে ‘আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ’ গ্রহণ করবে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে শুরু হবে কঠোর অভিযান।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পেরুতে দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভে সহিংসতায় একজন নিহত ও অন্তত ১০০ জন আহত হন।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর পেরুতে ১৮ হাজারের বেশি চাঁদাবাজির ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। একই সময়ে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাও বেড়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, সরকারের এই জরুরি অবস্থা কার্যকর হলে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ তরুণদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
গত ১০ অক্টোবর দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তে সংসদের মাধ্যমে অভিশংসিত হন। এরপর সংসদের স্পিকার হোসে জেরি অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন।
তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করবে এবং নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেবে। তবে নতুন করে শুরু হওয়া তরুণদের আন্দোলন পেরুর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও গভীর করে তুলেছে।
সূত্র: ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর